Syed Waliullah ছিলেন একজন বাংলাদেশি ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার এবং নাট্যকার। তিনি তাঁর প্রথম উপন্যাস "লালসালু" এর জন্য বিশেষভাবে পরিচিত ছিলেন। তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, আদমজি পুরস্কার, একুশে পদক এবং সেরা কাহিনীর জন্য বাংলাদেশ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। (উইকিপিডিয়া)
জন্ম: ১৫ আগস্ট ১৯২২, চট্টগ্রাম
মৃত্যু: ১০ অক্টোবর ১৯৭১ (বয়স ৪৯ বছর), প্যারিস, ফ্রান্স
Note : ছাত্র ছাত্রী ভাই বোনদের বলছি আপনারা Youtube থেকে লালসালু মুভি দেখলেই পুরো স্টোরি বুজবেন . Note : লালসালু এবং Tree Without Roots একদমই same স্টোরি কিন্তু এই খানে কিছু নাম চেঞ্জ আছে যেমন: উপন্যাস "Tree Without Roots" এর গ্রামটির নাম মহব্বতপুর। "Tree Without Roots" হল বাংলা উপন্যাস "লাল সালু"-এর অনুবাদ, যেখানে গ্রামটিকে মহব্বতনগর নামেও উল্লেখ করা হয়েছে। আরো চেঞ্জ আছে যেমন পীরের নাম, etc . এই জিনিস গুলা একটু দেখে পড়বেন ।
লালসালু (Tree Without Roots) সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর একটি শক্তিশালী উপন্যাস, যা বাংলাদেশের গ্রামীণ সমাজের জটিল সামাজিক সম্পর্ক, ধর্মীয় শোষণ, অন্ধবিশ্বাস এবং মানুষের দুর্বলতার দিকে গভীরভাবে আলো ফেলেছে। উপন্যাসটি একটি ছোট গ্রামে সেট, যেখানে একজন সুযোগসন্ধানী ব্যক্তি মজিদ ধর্মীয় বিশ্বাসের সুবিধা নিয়ে গ্রামবাসীর উপর আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে থাকে। মজিদের এই কুৎসিত ধর্মীয় প্রতারণার মাধ্যমে সমাজের সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতি এক জোরালো সমালোচনা উঠে এসেছে।
এই উপন্যাসে মজিদ চরিত্রটি মানুষের অন্ধ বিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে নিজের ক্ষমতা, ধন-সম্পত্তি এবং কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে। এর মাধ্যমে ওয়ালীউল্লাহ ধর্মের অপব্যবহার, সামাজিক অবক্ষয় এবং মানুষের ধর্মীয় অনুশাসনকে পুঁজি হিসেবে ব্যবহার করার প্রশ্ন তুলে ধরেছেন। মজিদের চরিত্রে তিনি মানুষের দুর্বলতা এবং প্রতারণা দ্বারা সমাজের কুৎসিত দিকগুলো উন্মোচিত করেছেন।
উপন্যাসটির কাহিনি বাংলাদেশের এক ছোট গ্রামে ঘটে, যা ১৯৫০-এর দশকের গ্রামীণ জীবনধারা ও সমাজকে চিত্রিত করে। মূল চরিত্র মজিদ একজন সাধারণ গ্রামবাসী, কিন্তু সে এক দুর্দান্ত বুদ্ধিমত্তা ও কৌশল দ্বারা ধর্মীয় বিশ্বাসের মাধ্যমে নিজেকে গ্রামবাসীদের মধ্যে এক বিশেষ স্থানে প্রতিষ্ঠিত করে। উপন্যাসে মজিদের প্রথম স্ত্রী রহিমা, দ্বিতীয় স্ত্রী জামিলা এবং অন্যান্য গ্রামবাসীসহ অনেক চরিত্র রয়েছে, যারা মজিদের প্রতারণা এবং তার ক্ষমতার পেছনের প্রকৃত কারণকে তুলে ধরে।
উপন্যাসটির শুরুতে মজিদ একটি ছোট গ্রামে আসে। সে একদিন একটি পুরনো কবরের খোঁজ পায়, যা স্থানীয় গ্রামবাসীদের কাছে পবিত্র বলে বিবেচিত। মজিদ, তার সুযোগসন্ধানী মনোভাবকে কাজে লাগিয়ে, দাবি করে যে কবরটি একটি পবিত্র আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্বের, এবং তাদের কল্যাণের জন্য গ্রামবাসীদের এই কবরটি সংরক্ষণ করতে হবে। সে তাদের জানায় যে এই পবিত্র ব্যক্তি তাদের সব ধরনের বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করবে, এবং এই সঠিক বিশ্বাসের কারণে মজিদ নিজের জীবনে অনুগ্রহ লাভ করবে।
মজিদ এই কবরের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিতে শুরু করে এবং গ্রামবাসীদের তার সেবা গ্রহণে বাধ্য করে। কিভাবে একজন সাধারণ মানুষ ধর্মীয় চেতনাকে কাজে লাগিয়ে ক্ষমতা অর্জন করতে পারে, তা মজিদের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। মজিদ তার ধর্মীয় আশ্রয়ে নতুন নতুন নিয়ম-নীতি তৈরি করে গ্রামবাসীদের শাসন করতে থাকে, তারা যারা তার আদেশ মানে না, তাদেরকে সমাজ থেকে বিতাড়িত করে দেয়।
এভাবে মজিদ গ্রামে এক একক শাসক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে থাকে এবং বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় নিয়ন্ত্রণ তার হাতের মুঠোয় চলে আসে। সে শুরুতে সাধারণভাবে গ্রামবাসীর কাছে ধর্মীয় বিষয়ে সাহায্য প্রার্থনা করে এবং তারপর ধীরে ধীরে তাদেরকে তার পেছনে আনে। মজিদ তার ধর্মীয় আশ্রয়ের জন্য প্রচুর দান সংগ্রহ করে, এবং সেসব টাকা-পয়সা তাকে গ্রামে এক ধরনের প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব তৈরি করে দেয়।
তবে মজিদের ক্ষমতা কিছুদিন পরেই ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। অন্য একটি গ্রামের ধর্মীয় নেতা গুলাম, মজিদের চেয়ে আরও জনপ্রিয় হতে শুরু করে। মজিদ তার শাসনকে অটুট রাখতে গুলামের অনুসারীদের বিরুদ্ধে এক অভিযান শুরু করে। মজিদের এই হামলা গ্রামবাসীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে এবং তার প্রকৃত উদ্দেশ্য সম্পর্কে সন্দেহ তৈরি হয়। মজিদ তার সত্ত্বা এবং শাসনকে ধরে রাখার জন্য আরও বেশি হিংস্র ও শোষক হয়ে ওঠে, যা তার এবং গ্রামবাসীদের সম্পর্কের মধ্যে অবিশ্বাসের জন্ম দেয়।
মজিদের স্ত্রী রহিমা, যিনি মজিদের প্রতি অন্ধবিশ্বাসী ছিলেন, তার জন্য কিছুটা দ্বিধার সৃষ্টি হয়, কারণ তার মাঝে মজিদের কাজকর্ম সম্পর্কে সন্দেহ জন্ম নেয়। তবে রহিমা তার বিশ্বাসের কারণে মজিদকে সাহায্য করতে থাকে। অপরদিকে, মজিদের দ্বিতীয় স্ত্রী জামিলা, মজিদের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলে এবং তার শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে, যা মজিদের কাছে এক ধরনের বিপদের সংকেত হয়ে ওঠে।
এভাবেই মজিদ তার ধর্মীয় শোষণকে আরও শক্তিশালী করে এবং নিজেকে অবাধ ক্ষমতার অধিকারী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে থাকে। তবে, শেষপর্যন্ত মজিদ তার অর্জিত ক্ষমতার চেয়ে বেশি ভয় ও সন্দেহের শিকার হয়। তার মানসিক অবস্থা ভেঙে পড়ে এবং সে বুঝতে পারে যে তার ক্ষমতা আসলে ভঙ্গুর এবং অসত্যের ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। তার সামাজিক ভিত্তি একেবারে তলিয়ে যায়, এবং সে এক ভয়াবহ অস্থিরতায় ধুয়ে পড়ে।
ধর্মীয় শোষণ
লালসালু উপন্যাসের একটি প্রধান বিষয় হলো ধর্মের অপব্যবহার। মজিদ ধর্মীয় প্রতারণার মাধ্যমে গ্রামবাসীদের উপর আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে। ওয়ালীউল্লাহ এই উপন্যাসের মাধ্যমে ধর্মীয় শোষণের কৌশলকে কঠোরভাবে সমালোচনা করেছেন।
অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কার
গ্রামবাসীদের অন্ধবিশ্বাস এবং কুসংস্কারের প্রতি তাদের গভীর আনুগত্য মজিদের ধর্মীয় শোষণের পক্ষে একটি শক্তিশালী অস্ত্র হয়ে ওঠে। তারা মজিদের কথামত চলতে থাকে এবং বাস্তবে কোনো সত্যতা না থাকা সত্ত্বেও তার শাসনে বিশ্বাস করে। উপন্যাসে ওয়ালীউল্লাহ তুলে ধরেছেন যে, অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কার মানুষকে শোষিত হতে বাধ্য করে।
ক্ষমতা ও দুর্নীতি
মজিদের ক্ষমতাগ্রহণের পর তার চরিত্রে যে পরিবর্তন আসে, তা ক্ষমতার অন্ধকার দিকগুলিকে উন্মোচিত করে। তার শাসনের ফলে তার চরিত্র দুর্নীতিতে আক্রান্ত হয়, এবং সেই দুর্নীতি গ্রামবাসীদের উপর তার অত্যাচারের রূপ নেয়। ওয়ালীউল্লাহ ক্ষমতার প্রতি মানুষের দুর্বলতা এবং তার অপব্যবহার নিয়ে এক কঠোর সমালোচনা করেছেন।
অস্থিরতা ও সন্দেহ
মজিদের ক্ষমতার ভেতরে যেসব ভয় এবং সন্দেহ বাসা বাঁধে, তা তার পতনের ইঙ্গিত দেয়। একসময় যিনি গ্রামে শক্তিশালী এবং অপরাজেয় ছিলেন, সেই মজিদ শেষপর্যন্ত শঙ্কিত এবং অসহায় হয়ে পড়ে। তার ক্ষমতা এক ধরনের আস্থাহীনতার শিকার হয়।
মহিলা চরিত্রের ভূমিকা
রহিমা ও জামিলা চরিত্র দুটি মজিদের শোষণের বিরোধিতা বা সহায়তার মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করে। রহিমা, যিনি মজিদের অন্ধবিশ্বাসী স্ত্রীরূপে অভিনয় করেন, এবং জামিলা, যিনি মজিদের শাসনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিবাদ করেন, এদের মাধ্যমে ওয়ালীউল্লাহ নারীর সামাজিক অবস্থান এবং তাদের প্রতিরোধের শক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
লালসালু একটি গভীর এবং চিন্তাশীল উপন্যাস, যা ধর্মীয় শোষণ, ক্ষমতার অন্ধকার দিক এবং অন্ধবিশ্বাসের সমাজে মানুষের দুর্বলতার বিরুদ্ধে এক কঠোর সমালোচনা। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ এর মাধ্যমে দেখিয়েছেন যে, প্রতারণা এবং ধর্মীয় বিভ্রমের ভিত্তিতে গড়ে উঠা ক্ষমতা এক সময় ধ্বংস হয়ে যায়, কারণ এটি কখনওও স্থায়ী হতে পারে না। এই উপন্যাসটি আজও আমাদের কাছে একটি সতর্কীকরণ হিসেবে দাঁড়িয়ে রয়েছে, যেখানে মানুষের বিশ্বাস এবং দুর্বলতার কুৎসিত ব্যবহার দেখানো হয়েছে।
Majid
The main character of the story, a cunning and manipulative individual who exploits religious beliefs to gain power and control over the village.
Khaleq Byapari
A wealthy businessman who is influential in the village. He plays a significant role in the economic and social structure of the community.
Government Officer A representative of the government, who is involved in the administration and works closely with local leaders and the community.
Rohima
Majid's first wife, who is devoted to him and supports his actions, although she later begins to question his true intentions.
Jamila
Majid's second wife, who initially appears to be loyal to him, but becomes more critical of his actions as the story progresses.
Hasuni's Mother
The sister of Taher Kader, a significant character in the story. Her role adds to the family dynamics and social interactions in the village.
Taher, Kader, and Ratan
Three brothers who play essential roles in the story, with varying degrees of involvement in the events surrounding Majid and the village's social structure.
Akkas
The son of Modabber, who is an essential character in the village's family dynamics and plays a part in the unfolding of events.
Modabber
An elderly farmer, father of Akkas, whose life in the village is affected by the changes brought about by Majid's manipulative actions.
Taher and Kader's Elderly Parents
The parents of Taher and Kader, whose experiences and perspectives provide insights into the traditional ways of life in the village.
Ammena Bibi
Khaleq Byapari's first wife, who is a central figure in the family’s life and plays a role in the social structure of the village.
Tanu Bibi
Khaleq Byapari's second wife, a character who adds to the social complexity and the relationships within the village.
Pir of Auwalpur
A religious figure from the nearby area, whose influence is felt throughout the village, especially in religious matters.
Kulsum
A helper to Rohima, who assists her and plays a minor yet supportive role in the story.
Matlub Khan
The President of the Auwalpur Union Board, an influential political figure in the village.
Dhala Mia
The brother of Khaleq Byapari’s second wife, Tanu Bibi, who has his own role in the social network of the village.