W. Whitman Song Of Myself Bangla Summary
W. Whitman Song Of Myself Bangla Summary
ওয়াল্ট হুইটম্যান (১৮১৯–১৮৯২) ছিলেন একজন প্রভাবশালী আমেরিকান কবি, প্রাবন্ধিক ও সাংবাদিক, যাকে প্রায়শই "মুক্তছন্দের জনক" বলা হয়। তিনি ৩১ মে ১৮১৯ সালে ওয়েস্ট হিলস, নিউ ইয়র্কে জন্মগ্রহণ করেন এবং ব্রুকলিনে বড় হন। অল্প বয়সেই তিনি মুদ্রণ ও সাংবাদিকতায় কাজ শুরু করেন, বিভিন্ন পত্রিকা সম্পাদনা করেন এবং নিবন্ধ লেখেন, তবে তাঁর আসল ভালোবাসা ছিল কবিতা
আমেরিকার গৃহযুদ্ধ (১৮৬১–১৮৬৫) চলাকালীন, হুইটম্যান সামরিক হাসপাতালে নার্স হিসেবে কাজ করেন এবং আহত সৈন্যদের সেবাযত্ন করেন। এই অভিজ্ঞতা তাঁর পরবর্তী লেখাগুলোর ওপর গভীর প্রভাব ফেলে, বিশেষ করে তাঁর কাব্যগ্রন্থ Drum-Taps (১৮৬৫)-এ এর ছাপ স্পষ্টভাবে দেখা যায়। তিনি বারবার Leaves of Grass সম্পাদনা ও সম্প্রসারণ করেন, যা তাঁর সারাজীবনের শ্রেষ্ঠ কীর্তি হয়ে ওঠে।
জীবনের শেষ সময় তিনি ক্যামডেন, নিউ জার্সিতে কাটান, যেখানে শারীরিক অসুস্থতার মধ্যেও তিনি লেখালেখি চালিয়ে যান। ২৬ মার্চ ১৮৯২ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর সাহিত্যিক অবদান আধুনিক কবিতাকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে এবং আজও তাঁর কাব্যসম্ভার বিশ্বজুড়ে আলোচিত হয়।
Introduction: ওয়াল্ট হুইটম্যান তাঁর কবিতার সংকলন "লিভস অব গ্রাস" (Leaves of Grass)-এর জন্য বিশেষভাবে পরিচিত, যা প্রথম ১৮৫৫ সালে প্রকাশিত হয়। এই কবিতার শিরোনাম হুইটম্যানের নিজস্ব ভাবনার সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। "লিভস অব গ্রাস" প্রথমে একটি ছোট লিফলেট আকারে প্রকাশিত হয় এবং তিনি জীবিত থাকা পর্যন্ত নতুন সংস্করণ প্রকাশিত হতে থাকে। কবিতার সংখ্যাও ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে—শুরুতে এটি মাত্র বারোটি কবিতা নিয়ে প্রকাশিত হয়েছিল, যা পরে চার শতাধিক কবিতায় পরিণত হয়।
ওয়াল্ট হুইটম্যান ছিলেন একজন লেখক ও কবি, যাকে মানবতাবাদী (হিউম্যানিস্ট) হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বাস্তবিক অর্থে, তিনি 'আমেরিকানিজমের দূত' (Apostle of Americanism) হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। তিনি আমেরিকার প্রতি প্রবল ভালোবাসা অনুভব করতেন, বিশেষ করে প্রকৃতি ও সাধারণ নাগরিকদের প্রতি। হুইটম্যান ছিলেন আমেরিকান সাহিত্যের এক অগোছালো প্রতিভা। তাঁর আদর্শ ছিল ব্যক্তি মানুষ ও মানবতার প্রশংসা করা। এটি তাঁর শিক্ষাদানের মধ্যেও স্পষ্টভাবে প্রকাশ পেয়েছিল। একবার তিনি ক্লাসে তাঁর ছাত্রদের ডিক্লারেশন অব ইন্ডিপেন্ডেন্স (স্বাধীনতার ঘোষণা)-এর একটি বাক্যের ব্যাকরণ বিশ্লেষণ করে দেখান, যেখানে তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন যে শব্দগুলো কিভাবে মানবসমতার ধারণার সঙ্গে যুক্ত।
"সং অব মাইসেলফ" (Song of Myself) হল ৫২ অংশের একটি কবিতা, যার কোনো স্বতন্ত্র শিরোনাম ছিল না এবং এটি "লিভস অব গ্রাস"-এর প্রথম সংস্করণেই প্রকাশিত হয়। এই কবিতাটি গণতন্ত্র ও মানবতাবাদের প্রতি হুইটম্যানের দৃষ্টিভঙ্গির চূড়ান্ত প্রকাশ। এখানে তিনি মানুষকে, বিশেষ করে নিজেকে, ঈশ্বর, মহাবিশ্ব ও চিরকালীন অস্তিত্বের সমতুল্য মর্যাদায় উন্নীত করতে চেয়েছিলেন। এটি ছিল একজন কবির নিজের ব্যক্তি-সত্তার ও বৃহত্তর মানবতার প্রতি স্বীকারোক্তি।
এই কবিতার প্রধান ভাবনা হল ব্যক্তি ও সমষ্টির মধ্যে দ্বৈততা বা পার্থক্যের সমস্যা। ঐতিহাসিকভাবে ব্যক্তি ও মানবতাকে দুটি পৃথক বিষয় হিসেবে দেখা হয়েছে, কিন্তু হুইটম্যান এই বিভাজন দূর করতে চেয়েছেন। তিনি চেয়েছিলেন ব্যক্তি ও মানবতাকে একীভূত করতে এবং তাদের সমান ও চিরন্তন রূপে উপস্থাপন করতে। তাঁর অন্যান্য কবিতাগুলোর মধ্যেও এই চিন্তার প্রতিফলন দেখা যায়, যেখানে তিনি ব্যক্তি ও সমষ্টির মধ্যে পার্থক্য দূর করে তাদের একত্রিত করতে চেয়েছেন।
১৮৫৫ সালের "সং অব মাইসেলফ" (Song of Myself) পাণ্ডুলিপি অর্জনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস:
কবি ওয়াল্ট হুইটম্যান। এই কবিতার পাণ্ডুলিপিটি প্রথম ১৮৫৫ সালে প্রকাশিত হয়, যখন এটি "লিভস অব গ্রাস" (Leaves of Grass) বইয়ের অংশ হিসেবে ছাপা হয়। এরপর পাঁচ বছর পর এটি আবার প্রকাশিত হয়, এই সময়ে হুইটম্যান কবিতাটিতে ব্যাপক পুনর্লিখন ও সম্পাদনা করেন।
দ্বিতীয়বার ১৮৬৭ সালে "লিভস অব গ্রাস" পুনরায় মুদ্রিত হয়, কিন্তু প্রকাশকদের ব্যয়ে এটি ছাপানো হয়। তবে, এই সংস্করণের প্রতি প্রতিক্রিয়া ভালো না হওয়ায়, ১৮৮২ সালে হুইটম্যান নিজেই তৃতীয় সংস্করণের ছাপানোর খরচ বহন করেন। এই সংস্করণে তাঁর পূর্ববর্তী কাজের অনেক সংশোধনী অন্তর্ভুক্ত ছিল। তিনি ১৮৯২ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কবিতাটি পুনরায় সম্পাদনা ও সংশোধন চালিয়ে যান।তবে, ১৮৮২ সালের পর খুব বেশি বড় পরিবর্তন হয়নি, তাই এই সংস্করণটিকেই "সং অব মাইসেলফ"-এর চূড়ান্ত স্বীকৃত সংস্করণ হিসেবে ধরা হয়।
এই কবিতাটি অনেক দিক থেকে ব্যতিক্রমী ছিল। এটি আমেরিকান কবিতায় নতুন ছন্দ ও নতুন ধরনের পঙক্তির প্রচলন ঘটায়। হুইটম্যান প্রচলিত কবিতার ছন্দ থেকে সরে এসে, যেখানে নির্দিষ্ট জোর ও অপর জোরহীন শব্দের ক্রম এবং অন্ত্যমিল অনুসরণ করা হতো, তার পরিবর্তে মুক্তছন্দ (free verse) ও তালবদ্ধ ছন্দ ব্যবহার করেন।
এই কবিতার পঙক্তিগুলো দীর্ঘ এবং এর গতি ও ছন্দকে "কিং জেমস বাইবেলের" (King James Bible) ভাষার সাথে তুলনা করা হয়েছে।
"সং অব মাইসেলফ" (Song of Myself) শুধুমাত্র ব্যক্তিস্বাধীনতার উদযাপন নয়; এটি ১৯শ শতকের আমেরিকান জীবনের এক বিস্তৃত চিত্র। এই কবিতায় হুইটম্যান আমেরিকার বৈচিত্র্য ও সমৃদ্ধিকে তুলে ধরেছেন।
বিশিষ্ট দার্শনিক রালফ ওয়াল্ডো এমারসন (Ralph Waldo Emerson) বলেছিলেন, একজন প্রকৃত কবির সত্যিকার পরীক্ষা হল তিনি "অপরিহার্য সত্য" কতটা প্রকাশ করতে পারেন। যদি হুইটম্যানের ক্ষেত্রে এটি যাচাই করা হয়, তাহলে দেখা যাবে, তিনি তাঁর কবিতায় তাঁর মাতৃভূমির প্রকৃত চিত্র তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন। তবে, শুধু আমেরিকাকে চিত্রিত করাই তাঁর লক্ষ্য ছিল না—তিনি তাঁর নিজস্ব "আমি" বা আত্মপরিচয়ের সন্ধানও করেছেন।এই কবিতার মূল বার্তাগুলোর মধ্যে একটি হল যুগই ব্যক্তিকে গঠন করে। তাই, "সং অব মাইসেলফ" এক অর্থে হুইটম্যানের নিজেকে খুঁজে পাওয়ার গল্প। তবে, এটি শুধুই একজন ব্যক্তির আত্মচিন্তার একাকী ভাষ্য নয়; বরং এই কবিতা সমসাময়িক আমেরিকার প্রেক্ষাপটে রচিত হয়েছে।
হুইটম্যান যে "আমি"-এর কথা বলেন, তা শুধু ব্যক্তিগত সত্তা নয়, বরং জাতীয় সত্তাও। তিনি বারবার তাঁর দৃষ্টিকোণ পরিবর্তন করেন—একবার তিনি নিজের "আমি"-র কথা বলেন, আবার সেটিকে সমগ্র আমেরিকার জনগণের "আমি"-তে রূপান্তরিত করেন।
এই কবিতার গভীরে রয়েছে "আমরা" কিভাবে "আমরা" হলাম—এই রূপান্তরের গল্প। এটি অনুসন্ধান করে, "আমরা" হওয়ার প্রকৃত অর্থ কী। হুইটম্যানের ব্যক্তিগত "আমি" এবং সমগ্র আমেরিকার জনগণের "আমি" এক ধারাবাহিক পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যায়, এবং "সং অব মাইসেলফ" সেই পরিবর্তনের অর্থ খোঁজার এক প্রচেষ্টা।
"সং অব মাইসেলফ" (Song of Myself)-এর অন্যতম প্রধান ভাবনা হল নিজের সত্তার উদযাপন। হুইটম্যান বলেন যে তিনি নিজেকে উদযাপন করেন, এবং এর মাধ্যমে তিনি সমগ্র মানবজাতিকেও উদযাপন করেন, কারণ তারা সকলেই এক ঐক্যসূত্রে আবদ্ধ। তিনি লিখেছেন—
"আমি অলসভাবে শুয়ে থাকি এবং আমার আত্মাকে আমন্ত্রণ জানাই,
আমি আরামে বসে গ্রীষ্মের ঘাসের এক ফোঁটা শিশির দেখি।"
এই সাধারণ ঘটনা—ঘাসের ওপর শুয়ে থাকা—আসলে একটি গভীর তাৎপর্য বহন করে। এর মাধ্যমে হুইটম্যান নিজের অন্তর্জগতের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করছেন। তাঁর বিশ্বাস, সময় নিয়ে নিজেকে বোঝার চেষ্টা করলে মানুষ বিশ্বজগতের সত্যের কাছাকাছি পৌঁছাতে পারে।
এই পর্যবেক্ষণ থেকেই তিনি বিশ্বাস করেন যে বিশ্ব মহাবিশ্বের প্রকৃতি শুভ এবং সত্য ও পবিত্রতা সমস্ত সৃষ্টির মধ্যেই বিদ্যমান। তিনি বলেন—
"বিশ্বাস ও বিদ্যালয় কিছুক্ষণের জন্য স্থগিত,
তারা যা কিছু, তাই যথেষ্ট, কিন্তু কখনোই ভুলে যাওয়া নয়।
আমি ভালো-মন্দ দুটোই আশ্রয় দেই,
আমি নির্ভয়ে সব কিছুকে প্রকাশের অনুমতি দেই,
প্রকৃতি নিজের অপ্রতিরোধ্য শক্তি নিয়ে নিজস্ব পথে চলে।"
এই উপলব্ধি যে বিশ্বের সত্য প্রকৃতিকে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমেই বোঝা যায়, এবং নিজের স্বতঃস্ফূর্ত চিন্তা ও অনুভূতিগুলোকে মুক্তভাবে প্রকাশ করলেই তা উপলব্ধি করা সম্ভব, তা আবারও নিজের সত্তার উদযাপনের সঙ্গে সংযুক্ত।হুইটম্যান বিশ্বাস করেন প্রকৃত সত্য খুঁজে পাওয়া সম্ভব ব্যক্তি মানুষের মধ্যেই, এবং প্রত্যেক ব্যক্তি যে সত্য আবিষ্কার করে, তা আসলে সার্বজনীন সত্য।
নিজের সত্তাকে মহিমান্বিত করার মাধ্যমে হুইটম্যান সাধারণ মানুষের মহত্ত্বকেও উদযাপন করেন। কারণ, প্রতিটি সাধারণ মানুষই একই ধরনের আনন্দ ও উপলব্ধির অভিজ্ঞতার অংশীদার, যা তিনি "সং অব মাইসেলফ"-এ তুলে ধরেছেন।
"লিভস অব গ্রাস" (Leaves of Grass) এক ব্যতিক্রমধর্মী বই, যা প্রকাশিত হওয়ার পর একটি নতুন স্বাস্থ্য আন্দোলনের সূচনা করেছিল বলে মনে করা হয়।আমরা এই বিশ্বাসে পৌঁছাই কি লেখকের মহান আত্মার সংক্রমণের কারণে, নাকি এই বইয়ের চারশো পৃষ্ঠার মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের বিশুদ্ধ বাতাস প্রবাহিত হওয়ায়—তা আমরা নির্ধারণ করতে পারি না। তবে কারণ যাই হোক না কেন, আমাদের মন ও দেহ উভয়ই চায় যে এই বইয়ের আনন্দ যেন মুক্ত প্রকৃতির মাঝে উপভোগ করা হয়।
দেশের সাধারণ স্বাস্থ্যসচেতন মানুষ, যারা স্যানেটোরিয়ামের প্রচারের জন্য কোনো মাধ্যম খুঁজছেন, তারা এর চেয়ে ভালো কিছু খুঁজে পাবেন না—যদি শিক্ষার্থীরা ওয়াল্ট হুইটম্যানের এই পুস্তকের স্বাস্থ্যকর বিষয়বস্তু একটি ছায়াময় গাছের নিচে অথবা নদীর কোলাহলময় তীরে বসে গ্রহণ করে।
তবে, যদি আমরা বিষয়টি নিয়ে আরও গভীরভাবে চিন্তা করি, এবং কবির দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এটি বিচার করি, তাহলে দেখা যাবে যে তিনি আধুনিক সমাজের প্রথাগুলোর প্রতি কঠোর সমালোচনা করেছেন।
তিনি দেখিয়েছেন কিভাবে একটি অতিরিক্ত কৃত্রিম জীবনযাপনের পদ্ধতি আমাদের প্রকৃতি থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে গেছে। এটি আমাদের শহরের প্রাচীরে বন্দি করেছে, যেখানে আমাদের পুরো জীবনকাল কেটে যায়—একটি বন্ধ দরজা অতিক্রম করার প্রচেষ্টায়। আমরা চেষ্টা করি সেই নির্বিঘ্ন স্বাধীনতা, উন্মুক্ত আকাশ ও পৃথিবীর সংস্পর্শ, এবং আমাদের পূর্বপুরুষদের অবাধ, অশৃঙ্খল জীবনধারার প্রতি ফিরে যাওয়ার।
আজ, মানুষ প্রকৃতির কাছেই ফিরে যেতে চায়। তবে প্রকৃতিকে খুঁজে পাওয়ার জন্য যে পরিকল্পনাগুলো তৈরি করা হয়েছে, সেগুলো প্রায়শই জটিল ও অত্যধিক প্রস্তুতিমূলক। আমরা প্রকৃতির কাছাকাছি যেতে চাইলেও সত্যিকার অর্থে প্রকৃতির কোলে পুরোপুরি ফিরে যেতে পারিনি। বরং আমরা একটি কাল্পনিক ও আদর্শিক আর্কাডিয়া (Arcadia – গ্রিক পুরাণে শান্তিপূর্ণ গ্রামীণ জীবন) নির্মাণের চেষ্টা করে যাচ্ছি, যেখানে প্রকৃতি আমাদের কাছে শুধুমাত্র একটি কল্পনাময় বিশ্রামস্থল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই কবিতাটি মূলত একজন মানুষের, অর্থাৎ ওয়াল্ট হুইটম্যানের, দৃষ্টিতে সমগ্র মানবতার প্রতিচিত্র তুলে ধরার একটি প্রয়াস। এটি এক আনন্দপূর্ণ দৃষ্টিতে বিভিন্ন জাতি, বয়স, ও লিঙ্গের প্রতি দৃষ্টিপাত করে, যা কেবল হুইটম্যানের অনন্য কাব্যভাষার মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছিল।
কবিতার পুরো অংশ জুড়ে হুইটম্যান প্রথম পুরুষ (first person) ব্যবহার করেছেন, যা পাঠকদের মনে এমন এক ধারণা সৃষ্টি করে যে যা কিছু বলা হচ্ছে, তা সরাসরি হুইটম্যানের নিজের কথা। তবে, কখনো কখনো তিনি কারও কণ্ঠস্বর বা কোনো বস্তুর দৃষ্টিকোণ থেকেও কথা বলতে পারেন।
উদাহরণস্বরূপ, কবিতার ৩১তম অংশে তিনি বলেন—
"আমি বিশ্বাস করি, একটি ঘাসের পাতা মহাকাশের তারা-বিন্দুর মতোই গুরুত্বপূর্ণ।"
এখানে তিনি হয়তো কোনো ব্যক্তিকে বলছেন, আবার হয়তো তিনি নিজেই ঘাসের সঙ্গে কথা বলছেন। এই লাইনটির মধ্য দিয়ে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন যে সবাই সমান—একটি ঘাসের পাতা ও একজন মানুষও পৃথক মর্যাদার নয়।প্রথম পুরুষে লেখার ফলে পাঠক ও হুইটম্যানের মধ্যে একটি গভীর সংযোগ তৈরি হয় এবং তিনি যা বলতে চান, তা আরও স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়।
কবিতার অন্যতম প্রধান বার্তা হল "সবাই অন্তর্ভুক্ত এবং কেউই বাদ পড়ে না।" এই অন্তর্ভুক্তির ধারণা তিনি বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী ও বিভিন্ন পটভূমির মানুষদের প্রতি তাঁর উল্লেখের মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন।
এর একটি পরিষ্কার উদাহরণ হল কবিতার ২৬তম অংশ, যেখানে তিনি বলেন—
"তারা চায় যে তিনি তাদের পছন্দ করুন, তাদের স্পর্শ করুন, তাদের সঙ্গে কথা বলুন, তাদের সঙ্গে থাকুন।"
এই উদ্ধৃতিটি একজন অসুস্থ ব্যক্তির কথা বলছে, কিন্তু হুইটম্যান এখানে সমগ্র মানবজাতির একটি সার্বজনীন অনুভূতি প্রকাশ করছেন।এইসব বিষয় তুলে ধরার মাধ্যমে কবিতাটি একটি সমতা ও গণতন্ত্রের উত্থানের বার্তা দেয়। হুইটম্যান এখানে বোঝাতে চেয়েছেন যে সমাজ ধীরে ধীরে এক নতুন সমতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, যেখানে সবাই সমান, এবং কেউই অবহেলিত নয়।
তিনি একটি কাহিনী বর্ণনা করেন যেখানে কবি বলেছেন যে একটি নদীতে ২৮ জন পুরুষ একই সাথে গোসল করছিল এবং এক যুবতী নারী নদীর পাশের একটি ঘর থেকে জানালা দিয়ে তাদেরকে দেখছিল। যুবকদের সুঠাম দেহের হাত নাড়ানো সাঁতার দেখে যুবতীর মনে প্রশান্তির হাওয়া বয়ে যাচ্ছিল এবং সে মনে মনে সেই যুবকদের সাথে নিজেকে সাথে নিয়ে নদীর ভেতরে ফেলে দিচ্ছিল। সেই যুবতী নারীর হাত যেন যুবকদের কাঁধের উপর দিয়ে বয়ে গেল কিন্তু যুবকেরা কোন কিছুই বুঝতে পারল না। নদীর ভেতরে উথাল মাতাল করে সাঁতার কাটছিল 28 জন যুবক এবং একজন যুবতী নারী কিন্তু সেই যুবতী নারীকে যুবকেরা বুঝতেই পারল না।