অল্ডাস লিওনার্ড হাক্সলি (Aldous Leonard Huxley) .অল্ডাস হাক্সলি ছিলেন একজন ইংরেজ লেখক ও দার্শনিক, যার সাহিত্যিক কর্মজীবন প্রায় ৫০টি বই জুড়ে বিস্তৃত। তার রচনায় কল্পকাহিনি, প্রবন্ধ, কবিতা এবং অ-গল্পগ্রন্থ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তিনি হাক্সলি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন, যা বিজ্ঞান ও সাহিত্য ক্ষেত্রে বিখ্যাত ছিল। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বালিওল কলেজ থেকে ইংরেজি সাহিত্যে ডিগ্রি অর্জন করেন।
জন্ম: ২৬ জুলাই, ১৮৯৪, গডালমিং, যুক্তরাজ্য
মৃত্যু: ২২ নভেম্বর, ১৯৬৩ (৬৯ বছর), লস অ্যাঞ্জেলেস, ক্যালিফোর্নিয়া, যুক্তরাষ্ট্র
Brave New World (১৯৩২): হাক্সলির সবচেয়ে বিখ্যাত উপন্যাস, যা একটি ভবিষ্যত সমাজের প্রতিচিত্র এঁকেছে যেখানে প্রযুক্তি ও সামাজিক নিয়ন্ত্রণ মানবিক মূল্যবোধকে প্রতিস্থাপন করেছে।
The Doors of Perception (১৯৫৪): ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও চেতনাবিস্তারের উপর ভিত্তি করে লেখা, যা পরবর্তীতে সাইকেডেলিক সংস্কৃতির উপর গভীর প্রভাব ফেলে।
Island (১৯৬২): তার শেষ উপন্যাস, যেখানে তিনি একটি আদর্শ সমাজের ধারণা উপস্থাপন করেন।
হাক্সলি ছিলেন একাধারে কল্পকাহিনির একজন মাস্টার ও সমাজ-দার্শনিক, যিনি ভবিষ্যতের সমাজ সম্পর্কে গভীর দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেছেন।
Complete Title: Brave New World.
Date of Writing: 1931.
Place Written: France.
First Published: 1932.
Literary Period: Modernism.
Genre: Dystopian fiction.
Setting: London and New Mexico, within the controlled environment of the fictional World State.
Climactic Moment: The novel reaches its peak during the philosophical debate between Mustapha Mond and John, as they clash over the values of the World State and individual freedom.
Main Antagonists: The World State itself, which enforces a rigid and oppressive social order, and Mustapha Mond, the World Controller who represents this authoritarian system.
Narrative Perspective: The story is told from a third-person point of view, offering a broader view of the dystopian world and its characters.
যখন হাক্সলি ১৯৩০-এর দশকের শুরুতে Brave New World লিখেছিলেন, তখন বিশ্ব সম্প্রতি প্রথম বিশ্বযুদ্ধের (১৯১৪-১৯১৮) ভয়াবহ ধাক্কা সহ্য করেছিল। সোভিয়েত ইউনিয়নে সাম্যবাদী একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, এবং ইউরোপে ফ্যাসিবাদী দলগুলো ক্ষমতা অর্জন করছিল। শুধু তাই নয়, আরেকটি বিশ্বযুদ্ধ আসন্ন মনে হচ্ছিল, যা দশকের শেষের দিকে শুরু হয়েছিল।
এর পাশাপাশি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রয়োগে বিশাল অগ্রগতি সাধিত হয়েছিল, এবং বিশ্ব শিল্পায়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছিল। হাক্সলি আমেরিকান শিল্পপতি হেনরি ফোর্ড (১৮৬৩-১৯৪৭)-কে প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করেন, যিনি ফোর্ড মোটর কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা এবং গণউৎপাদনের অ্যাসেম্বলি লাইন প্রযুক্তির উদ্ভাবক। গণউৎপাদন এমন একটি প্রক্রিয়া, যেখানে বিপুল পরিমাণ একধরনের মানসম্মত পণ্য তৈরি করা হয়—যেমন খাদ্য, জ্বালানি, গৃহস্থালি যন্ত্রপাতি বা যানবাহন।
হাক্সলি এমন এক ভবিষ্যৎ কল্পনা করেন, যেখানে এই উন্নয়ন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে, এবং মানুষেরও গণউৎপাদন করা হচ্ছে।
সেন্ট্রাল লন্ডন হ্যাচারির পরিচালক একদল শিক্ষার্থীকে কারখানার বিভিন্ন অংশ ঘুরিয়ে দেখান, যেখানে শিশুদের বোতলের ভেতর তৈরি ও লালন-পালন করা হয় (বিশ্ব রাষ্ট্রে স্বাভাবিক জন্মের কোনো অস্তিত্ব নেই)। পরিচালক দেখান কিভাবে বিশ্ব রাষ্ট্রের পাঁচটি শ্রেণি বা কাস্ট তৈরি করা হয়—আলফা (Alpha) ও বিটা (Beta) যারা সমাজের নেতৃত্ব দেয়, আর ডেলটা (Delta), গামা (Gamma) ও ইপসিলন (Epsilon) যারা শারীরিক ও মানসিকভাবে দুর্বল এবং সাধারণ শ্রমিকের কাজ করে।
পরিচালক আরও ব্যাখ্যা করেন যে প্রতিটি ব্যক্তিকে জন্মের আগেই ও জন্মের পর বিশেষ প্রশিক্ষণের (conditioning) মাধ্যমে গড়ে তোলা হয়, যাতে তারা বিশ্ব রাষ্ট্রের নৈতিক নিয়মগুলো মেনে চলে এবং তাদের নির্ধারিত কাজকে ভালোবাসে। প্রতিটি কাস্টকে আলাদাভাবে প্রশিক্ষিত করা হয়, তবে সবার জন্যই কিছু সাধারণ নিয়ম রয়েছে—
তাত্ক্ষণিক আনন্দ (instant gratification) খোঁজা
যৌন সম্পর্কে অবাধ ও মুক্ত থাকা (promiscuity)
অর্থনৈতিক ভোগবাদে (economic consumption) অংশগ্রহণ করা
সোমা (Soma) নামের মাদক ব্যবহার করা, যাতে কেউ কখনো দুঃখ অনুভব না করে
পরিচালক এই শর্তায়নের প্রক্রিয়াকে বলেন "সকল সুখ ও নৈতিকতার গোপন সূত্র"।
শিক্ষার্থীরা এবং পরিচালক বিশেষ একটি সুযোগ পান, যখন বিশ্ব রাষ্ট্রের ১০ জন শাসকের একজন, মুস্তাফা মন্ড (Mustapha Mond), তাদের সঙ্গে যোগ দেন। তিনি শিক্ষার্থীদের ব্যাখ্যা করেন কিভাবে বিশ্ব রাষ্ট্র সমাজ থেকে সব ধরনের প্রবল আবেগ, ইচ্ছা এবং ব্যক্তিগত সম্পর্ক দূর করে সুখ ও স্থিতিশীলতা সৃষ্টি করেছে।এরপর দৃশ্য স্থানান্তরিত হয় হ্যাচারির পোশাক পরিবর্তন কক্ষে, যেখানে লেনিনা ক্রাউন (Lenina Crowne) নামের এক নার্স তার বান্ধবী ফ্যানির (Fanny) কাছ থেকে সমালোচনা শোনে, কারণ সে দীর্ঘদিন ধরে শুধুমাত্র হেনরি ফস্টারকে (Henry Foster) ডেট করছে।
লেনিনা বুঝতে পারে তাকে আরও অবাধ হতে হবে, তাই সে সিদ্ধান্ত নেয় বার্নার্ড মার্ক্স (Bernard Marx)-কেও ডেট করবে, যদিও সে একজন আলফা হওয়া সত্ত্বেও আকারে ছোট ও কিছুটা অদ্ভুত স্বভাবের। এদিকে বার্নার্ড (Bernard) রেগে যায়, যখন সে শুনতে পায় হেনরি ফস্টার (Henry Foster) এবং আরেকজন ব্যক্তি লেনিনাকে (Lenina) নিয়ে "স্বাভাবিক" আলাপ করছে, যেন সে শুধুমাত্র ভোগের একটি বস্তু। পরে, লিফটে লেনিনা বার্নার্ডের আমন্ত্রণ গ্রহণ করে এবং তার সাথে নিউ মেক্সিকোর (New Mexico) স্যাভেজ রিজার্ভেশন (Savage Reservation) সফরে যেতে রাজি হয়।
এরপর বার্নার্ড তার বন্ধু হেলমহল্টজ ওয়াটসনের (Helmholtz Watson) কাছে যায়। দুজনই বিশ্ব রাষ্ট্রের নীতিগুলোর সমালোচনা করে।
বার্নার্ড অসন্তুষ্ট কারণ সে নিজের ছোট আকৃতি নিয়ে আত্মসচেতন। অন্যদিকে হেলমহল্টজ এতটাই প্রতিভাবান যে সে অনুভব করছে সমাজ তাকে দমিয়ে রেখেছে। লেনিনা যখন হেনরির সাথে ডেটে যায়, তখন বার্নার্ড তার দ্বি-সাপ্তাহিক সলিডারিটি সার্ভিসে (Solidarity Service) অংশ নেয়। সেখানে ১২ জন মানুষ সোমা (Soma) গ্রহণ করে, সমবেতভাবে "আমাদের ফোর্ড" (Our Ford) নামে চিৎকার করে এবং একপ্রকার উন্মত্ত আনন্দে মেতে ওঠে, যা শেষ পর্যন্ত যৌন উন্মাদনায় পরিণত হয়। কিন্তু বার্নার্ড উপলব্ধি করে যে, সে একমাত্র ব্যক্তি যে এই সার্ভিসে কোনোরকম তৃপ্তি পায়নি।
এরপর পরিচালক (Director) বার্নার্ডের স্যাভেজ রিজার্ভেশন ভ্রমণের অনুমতি স্বাক্ষর করেন। তবে এটি করতে গিয়ে তিনি ২০ বছর আগের নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলে ফেলেন—সে সময় তিনি স্যাভেজ রিজার্ভেশনে গিয়েছিলেন, তখন একটি ঝড় ওঠে এবং তার সঙ্গী নারী (female companion) হারিয়ে যায়। এই গোপন তথ্য বলে ফেলার পর পরিচালক লজ্জিত হয়ে বার্নার্ডকে আইসল্যান্ডে নির্বাসন দেওয়ার হুমকি দেয়। বার্নার্ড ভাবে এটি শুধুই ধমকি, কিন্তু যখন সে স্যাভেজ রিজার্ভেশনে প্রবেশের আগে হেলমহল্টজের কাছ থেকে জানতে পারে যে পরিচালক সত্যিই তাকে নির্বাসনে পাঠাতে চায়, তখন সে চমকে ওঠে।
স্যাভেজ রিজার্ভেশনে প্রবেশ করার পর, বার্নার্ড ও লেনিনা কিছু অস্বাভাবিক ভারতীয় (Indian) রীতিনীতি পর্যবেক্ষণ করে। সেখানে তারা জন (John) নামে একজন যুবকের সাথে দেখা করে, যে শেক্সপিয়ারের উদ্ধৃতি দেয় এবং তার মা লিন্ডার (Linda) সাথে থাকে।বার্নার্ড বুঝতে পারে যে, লিন্ডাই সেই নারী, যে পরিচালকের সাথে রিজার্ভেশনে এসেছিল এবং ঝড়ের সময় হারিয়ে গিয়েছিল। আরও চমকপ্রদ ব্যাপার হলো, জন আসলে পরিচালকের ছেলে!জন লেনিনার সৌন্দর্যে অভিভূত হয়ে পড়ে। বার্নার্ড যখন জন ও লিন্ডাকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়, জন দারুণ উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠে। সে ভাবে "ব্রেভ নিউ ওয়ার্ল্ড" (Brave New World) দেখার স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে।
কিন্তু বার্নার্ডের মূল উদ্দেশ্য ছিল প্রতিশোধ নেওয়া। সে পরিকল্পনা করে পরিচালককে জনসমক্ষে লজ্জিত করবে এবং পরিচালকের সন্তান থাকার বিষয়টি প্রকাশ করে তাকে সামাজিকভাবে ধ্বংস করবে। বার্নার্ডের পরিকল্পনা সফল হয়—পরিচালক এতটাই কলঙ্কিত হয় যে অবশেষে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়।
জন, "দ্য স্যাভেজ" (John, "the Savage"), লন্ডনের সমাজে প্রচণ্ড জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। কিন্তু সে বিশ্ব রাষ্ট্র (World State) নিয়ে গভীরভাবে বিচলিত—বিশেষত কারণ তার মা লিন্ডা (Linda) সোমা (Soma) নিয়ে একপ্রকার আনন্দময় ঘোরে (stupor) হারিয়ে গেছে।বার্নার্ড (Bernard), যে জনের বন্ধু ও গাইড হিসেবে পরিচিতি পায়, সমাজে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। কিন্তু যখন জন বার্নার্ডের পার্টিতে উপস্থিত হতে অস্বীকার করে, তখন অতিথিরা বার্নার্ডের প্রতি রূঢ় আচরণ করে, কারণ তারা মূলত "স্যাভেজের" সাথে দেখা করার জন্যই বার্নার্ডকে সহ্য করছিল। জন হেলমহল্টজের (Helmholtz) সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তোলে—সে হেলমহল্টজকে শেক্সপিয়ার পড়ে শোনায়, আর হেলমহল্টজ তার নিজের লেখা কবিতা জনকে পড়ে শোনায়।বার্নার্ড তাদের বন্ধুত্বে হিংসা অনুভব করে।
এদিকে লেনিনা (Lenina) ক্রমশ জনের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে, কিন্তু বুঝতে পারে না জন তাকে পছন্দ করে কি না।অবশেষে, জন লেনিনাকে ভালোবাসার কথা স্বীকার করে, কিন্তু যখন লেনিনা নিজেকে তার সামনে উন্মুক্ত করে, জন রেগে যায়।জন বিশ্ব রাষ্ট্রের অবাধ যৌনতা ঘৃণা করে, তাই সে লেনিনাকে অভিশাপ দেয়।আতঙ্কিত লেনিনা বাথরুমে লুকিয়ে পড়ে। ঠিক তখনই জন একটি ফোন কল পায়—তার মা মৃত্যুশয্যায়।
হাসপাতালে, মাদকগ্রস্ত লিন্ডা জনকে তার পুরনো ভারতীয় প্রেমিক পোপ (Popé) বলে মনে করে।এতে জন প্রচণ্ড রেগে যায়, কারণ সে তার মায়ের অপমান সহ্য করতে পারে না।এছাড়া, হাসপাতালে কিছু গামা (Gamma) শিশুকে মৃত্যুভয় দূর করার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছিল, যা তাকে আরও ক্রুদ্ধ করে তোলে।
শীঘ্রই লিন্ডা মারা যায়। জন সোমাকে দোষারোপ করে, কারণ সে মনে করে এটি তার মায়ের মৃত্যুর কারণ। সে হাসপাতালে ডেল্টাদের (Delta) সোমা বিতরণে হস্তক্ষেপ করে, ফলে একটি দাঙ্গা (riot) শুরু হয়।হেলমহল্টজ ও বার্নার্ড সেখানে উপস্থিত হয়, কারণ তারা আগেই জনের কাজের কথা শুনে এসেছিল। হেলমহল্টজ আনন্দের সাথে জনের পক্ষে লড়াইয়ে যোগ দেয়। বার্নার্ড দোটানায় পড়ে যায় এবং কিছুই করতে পারে না। পুলিশ দাঙ্গা দমন করে, এবং জন, হেলমহল্টজ ও বার্নার্ডকে মুস্তাফা মন্ডের (Mustapha Mond) কাছে নিয়ে যায়।
মুস্তাফা মন্ডের অফিসে জন ও মন্ড বিশ্ব রাষ্ট্রের সমাজ ব্যবস্থা নিয়ে বিতর্ক করে। জন যুক্তি দেয় যে বিশ্ব রাষ্ট্র সত্যকে ধ্বংস করে জীবনকে মূল্যহীন করে তুলেছে। মন্ড পাল্টা যুক্তি দেয়—স্থিরতা (stability) ও সুখ সত্যের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।তিনি বলেন, সুখ ছাড়া শিল্প ও সৌন্দর্য টিকে থাকতে পারে না।বিশ্ব রাষ্ট্র ঈশ্বরের প্রয়োজনীয়তা দূর করে দিয়েছে, কারণ সেখানে দুঃখ ও নৈতিক সংগ্রামের (moral effort) জন্য কোনো স্থান নেই।
জন উত্তর দেয় যে, সে কষ্ট ভোগ করার, এমনকি দুঃখী হওয়ার স্বাধীনতা চায়।মন্ড সিদ্ধান্ত নেয় যে, হেলমহল্টজ ও বার্নার্ডকে দ্বীপে নির্বাসনে পাঠানো হবে।কারণ বিশ্ব রাষ্ট্রের নিয়ম ভাঙা মানুষদের জন্য দ্বীপই একমাত্র স্থান।তবে জনকে সে তাদের সাথে যেতে দেয় না।
জন একটি পরিত্যক্ত বাতিঘরে (lighthouse) বসবাস শুরু করে। সে শারীরিক কষ্ট (self-flagellation), অনাহার (sleeplessness) ও কঠোর জীবনযাপনের মাধ্যমে নিজেকে শুদ্ধ করার চেষ্টা করে।একজন ফটোগ্রাফার তার এসব কষ্টের দৃশ্য ধারণ করে এবং এটি নিয়ে একটি আলোড়ন সৃষ্টিকারী সিনেমা তৈরি হয়।এরপর জনকে দেখতে শত শত দর্শক সেখানে ছুটে আসে।
জনের আত্ম-শাস্তির (whipping) দৃশ্য দেখে, জনতাও তাকে আবার সেটা করতে অনুরোধ করে।লেনিনা হেলিকপ্টার থেকে নেমে জনের সাথে কথা বলতে চায়।কিন্তু জন ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে "পতিতা" (strumpet!) বলে গালি দেয় এবং নিজেকে ও লেনিনাকে চাবুক মারতে শুরু করে।জনের এই উগ্র আবেগ বিশ্ব রাষ্ট্রের শর্তবদ্ধ জনতাকে এতটাই উজ্জীবিত করে যে, তারা সবাই একসাথে একটি উন্মত্ত যৌন উচ্ছ্বাসে (orgy) জড়িয়ে পড়ে**। পরের দিন, নিজের কাজে আতঙ্কিত জন নিজের জীবন শেষ করার সিদ্ধান্ত নেয়।সে আত্মহত্যা করে।
Lenina Crowne
লেনিনা সুন্দরী, জনপ্রিয় এবং সমাজের নিয়ম অনুসরণকারী এক নারী। তিনি সমাজের প্রচলিত আনন্দ-নির্ভর দর্শনে বিশ্বাসী এবং সম্পর্কের ক্ষেত্রে শারীরিক আকর্ষণকেই প্রাধান্য দেন। জন স্যাভেজের প্রেমে পড়লেও, তার সংযমী ও আত্মনিয়ন্ত্রণমূলক আচরণ তাকে হতাশ করে। তার শেষ পরিণতি অনিশ্চিত থাকে।
Bernard Marx
বার্নার্ড মারক্স হলেন সমাজে কিছুটা ব্যতিক্রমী, কারণ তিনি প্রচলিত সামাজিক মূল্যবোধের বিরুদ্ধে যান। তিনি লেনিনাকে ভালোবাসেন, কিন্তু আত্মবিশ্বাসের অভাবে সবকিছু নষ্ট করে ফেলেন। তার বন্ধু হেল্মহল্টজ ওয়াটসন ও জন স্যাভেজের সংস্পর্শে এসে তিনি আরও বিদ্রোহী হয়ে ওঠেন, তবে শেষ পর্যন্ত তিনি নিজের ব্যক্তিত্বের দুর্বলতার কারণে ব্যর্থ হন।
John Savage (জন স্যাভেজ)
জন উপন্যাসের অন্যতম প্রধান চরিত্র, যিনি সভ্য সমাজ ও বন্য সমাজের (reservation) মধ্যে অবস্থান করেন। তিনি শেক্সপিয়ারের নাটক পড়ে বড় হয়েছেন, যা তার দৃষ্টিভঙ্গিকে গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে। সভ্য সমাজের নিয়ম তাকে ভীত ও ক্ষুব্ধ করে তোলে, এবং অবশেষে তিনি সমাজ থেকে পালিয়ে যান ও আত্মহত্যা করেন।
Mustapha Mond
তিনি পশ্চিম ইউরোপের ওয়ার্ল্ড কন্ট্রোলারদের একজন, যিনি সমাজের নিয়ম-কানুন নির্ধারণ করেন। তিনি প্রচলিত ধ্যান-ধারণার বাইরে গিয়ে বই পড়েন, কিন্তু নিজের ক্ষমতা বজায় রাখার জন্য পুরনো জ্ঞানকে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে লুকিয়ে রাখেন।
Roger "The Director" Tomakin
তিনি সেন্ট্রাল লন্ডন হ্যাচারি অ্যান্ড কন্ডিশনিং সেন্টারের পরিচালক। জন স্যাভেজের আগমনের পর যখন প্রকাশ পায় যে তিনি জনের বাবা, তখন সমাজের লজ্জার কারণে তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
Helmholtz Watson
একজন মেধাবী লেখক, যিনি প্রচলিত সমাজের নিয়মে অসন্তুষ্ট এবং কিছু নতুন সৃষ্টি করতে চান। তিনি বার্নার্ডের বন্ধু এবং পরবর্তীতে সমাজের বিরোধিতা করার কারণে ফকল্যান্ড দ্বীপপুঞ্জে নির্বাসিত হন।
Linda
জন স্যাভেজের মা, যিনি একসময় সমাজের নিয়ম মেনে চললেও, রিজার্ভেশন-এ আটকা পড়ে গিয়েছিলেন। তিনি লন্ডনে ফিরে আসার পর অতিরিক্ত সোমা (এক ধরনের মাদক) গ্রহণের ফলে মারা যান।
Henry Foster
লেনিনার আগের প্রেমিক, যিনি সমাজের প্রচলিত মানসিকতাকে অনুসরণ করেন এবং জীবনের বড় কোনো প্রশ্ন নিয়ে চিন্তিত নন।
Benito Hoover
লেনিনার আরেকজন প্রেমিক, যিনি সাধারণ সমাজের প্রতিনিধিত্ব করেন এবং তার মধ্যে কোনো বিদ্রোহী চেতনা নেই।
Arch-Community-Songster of Canterbury
তিনি একজন গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ও সামাজিক ব্যক্তিত্ব, যিনি সমাজের অনুষ্ঠানগুলোর নেতৃত্ব দেন।